১২:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

কক্সবাজারে ডিএফও’র বাসভবনে গরুর খামার ও বন মোরগের পোল্ট্রি ফার্ম

{"remix_data":[],"remix_entry_point":"challenges","source_tags":["local"],"origin":"unknown","total_draw_time":0,"total_draw_actions":0,"layers_used":0,"brushes_used":0,"photos_added":0,"total_editor_actions":{},"tools_used":{"transform":1},"is_sticker":false,"edited_since_last_sticker_save":true,"containsFTESticker":false}

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন-১

আউট সোর্সিংয়ের কর্মচারীদের ব্যবহার, নিয়ন্ত্রণহীন অনিয়ন ও দুর্নীতি-

স্টাফ করেসপনডেন্ট,সিবিসি নিউজ :

কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম। গত বছর অক্টোবরে কাপ্তাই পাল্প উড বনবিভাগ থেকে বদলী হয়ে এখানে আসেন।
ডিএফও হিসেবে যোগদানের পর থেকে তিনি বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও পোস্টিং বাণিজ্য এবং পরিচালন খাত সহ বিভিন্ন খাতে অনিয়ম করে যাচ্ছে।

এরআগে কাপ্তাই বাগান বিভাগ ( পাল্প উড) ছিলেন। এরআগে বন অধিদপ্তরে সুফল প্রকল্পের ডিপিডি ছিলেন।
সুফল প্রকল্পের পিডি গোবিন্দের সাথে মিলে মিশে সারা বাংলাদেশে সুফল প্রকল্পের নামে হরিলুট করা অর্থ থেকে কমিশন ভিত্তিক অর্থ নিয়ে ভাগভাটোয়ারা করেছে। যোগদানের পর পরিচালন ব্যয়খাত ( মেন্টনেন্স), সবুজ বেষ্টনি প্রকল্প, সুফল প্রকল্পের, এফআরসিআরপি বাবদসহ ২ থেকে আড়াই কোটি টাকা বরাদ্দ আগে গত কয়েকমাসে ।

এই বরাদ্দ থেকে রেঞ্জ কর্মকর্তা বরাদ্দ পান ৬৯ হাজার ৫০০ টাকা। সবমিলিয়ে ৩১% লাখে কেটে নেওয়া হয় বলে কয়েকজন রেঞ্জ কর্মকর্তা জানান।
এদিকে, বিভাগীয় বন কর্মকর্তার জন্য বরাদ্দ করা সরকারি বাসভবনের পাশে গরুর খামার ও বন মোরগ দিয়ে পোল্ট্রি ফার্ম গড়ে তোলা হয়েছে। আর সেখানে কাজ করছে আউট সোর্সিংয়ের ৪ জন কর্মচারী। প্রতি মাসে ৬৬ হাজার টাকা সরকারি বেতন ( প্রতি জন ১৬৫০০ টাকা) নেওয়া কর্মচারীরা অফিসের চেয়ে ডিএফওর নিজের গড়ে তোলা খামার ও পোল্ট্রি ফার্মে ই সময় ব্যয় করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

গরুর খামার ও বন মোরগ দিয়ে পোল্ট্রি ফার্ম গড়ে তোলার বিষয়টি অবগত রয়েছেন বনবিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তারাও।

গরু ও মুরগী পরিচর্যায় নিয়োজিত রয়েছেন সরকারী বেতনভুক্ত আউট সোর্সিংয়ের ৪ জন কর্মচারী। তারা হলেন, জয়দেব, মো. ফোরকান, তন্ময় চাকমা ও কারি রাম তন্ময় চাকমা ও কারি রাম। সরকারি বেতন নেওয়া ওইসব কর্মচারী বিভাগীয় বন কর্মকর্তার অফিসের চেয়ে গরু ও মুরগী পরিচর্যার পেছনে সময় ব্যয় করেন।

সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে ভবনের ভেতরে যেতে চাইলে আউটসোর্সিং বনকর্মীরা বাঁধা দেন। পরে ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, মূল ভবনের সামনে একটি বড় গরুর গোয়ালাঘর তৈরি করা হয়েছে।

ভেতরে ছোট-বড় বেশ কয়েকটি গরু বাঁধা রয়েছে। গরু দেখাশোনায় থাকা ব্যক্তি এখানে বসবাস করেন। তবে বিষয়টি এড়িয়ে যান তন্ময় চাকমা ও কারি রাম। এছাড়া ভবনের বাইরে চারপাশে সবজি চাষ করার জন্য বাঁশের মাচা তৈরি করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিভাগীয় বন কর্মকর্তার বাস ভবনে সংরক্ষিত এলাকায় সরকারি এই বাস ভবনের ভেতরে রাখা গরুগুলোর তদারকিতে আছেন ডিএফও অফিসের আউট সোসিং স্টাফ তন্ময় চাকমা ও কারি রাম।

সরকারি বাসভবনে গরু ও বন মুরগি রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, বিগত ২/৩ মাস থেকে এখানে গরু রাখা হয়। দিনে কিংবা রাতে সমান তালে আলোক বাতি ব্যবহার করে বিদ্যুতের অপচয় করতে দেখা যায় বাস ভবনে গড়ে তোলা গরুর খামারে।

গত বছর অক্টোবর মাসের পর থেকে সরকারী খরচে বরাদ্দ করা বাস ভবনের পাশে খামার তৈরি করা হয়েছে জানান স্থানীয়রা।

গরু খামারে নিয়োজিত কর্মচারী তন্ময় চাকমা বলেন, এটা গরু রাখার ঘর কি না, আমি জানি না। আমাকে গরু দেখাশোনার জন্য রাখা হয়েছে। প্রতিদিন এখান থেকে গরু বের করে পরিচর্যা করা, ঘাস খাওয়াই এবং সন্ধ্যায় গোয়ালঘরে এনে গরু বেঁধে রাখি।
গরুর দুধও বিক্রি করা হয়। মুরগীও বিক্রি করা হয়।
খামারের মালিক কে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে কথা না বলে, অন্যত্র মোবাইলফোনে কথা বলতে চেষ্টা করেন। পরে জানান ডিএফও নুরুল ইসলাম এই খামারের মালিক।

অভিযোগের বিষয়ে ডিএফও নুরুল ইসলাম বলেন, সাবেক বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সরকারী খরচে খামার ও ফার্ম গড়ে তুলেন। এরপর এখন নতুন ভাবে গরু কিনে ব্যক্তিগত খামার করা হয়েছে। আরও বিভিন্ন
জানতে চাইলে পরে জানাবেন বলে ফোনকল কেটে দেন এবং এ বিষয়ে প্রতিবেদন না করতে তার ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তিকে দিয়ে ফোনকলে অনুরোধ করান।

….. (চলবে..)

জনপ্রিয়

কক্সবাজার সৈকতে ভ্রাম্যমান হকারদের উৎপাতে অতিষ্ঠ পর্যটকরা

কক্সবাজারে ডিএফও’র বাসভবনে গরুর খামার ও বন মোরগের পোল্ট্রি ফার্ম

১১:০৬:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন-১

আউট সোর্সিংয়ের কর্মচারীদের ব্যবহার, নিয়ন্ত্রণহীন অনিয়ন ও দুর্নীতি-

স্টাফ করেসপনডেন্ট,সিবিসি নিউজ :

কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম। গত বছর অক্টোবরে কাপ্তাই পাল্প উড বনবিভাগ থেকে বদলী হয়ে এখানে আসেন।
ডিএফও হিসেবে যোগদানের পর থেকে তিনি বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও পোস্টিং বাণিজ্য এবং পরিচালন খাত সহ বিভিন্ন খাতে অনিয়ম করে যাচ্ছে।

এরআগে কাপ্তাই বাগান বিভাগ ( পাল্প উড) ছিলেন। এরআগে বন অধিদপ্তরে সুফল প্রকল্পের ডিপিডি ছিলেন।
সুফল প্রকল্পের পিডি গোবিন্দের সাথে মিলে মিশে সারা বাংলাদেশে সুফল প্রকল্পের নামে হরিলুট করা অর্থ থেকে কমিশন ভিত্তিক অর্থ নিয়ে ভাগভাটোয়ারা করেছে। যোগদানের পর পরিচালন ব্যয়খাত ( মেন্টনেন্স), সবুজ বেষ্টনি প্রকল্প, সুফল প্রকল্পের, এফআরসিআরপি বাবদসহ ২ থেকে আড়াই কোটি টাকা বরাদ্দ আগে গত কয়েকমাসে ।

এই বরাদ্দ থেকে রেঞ্জ কর্মকর্তা বরাদ্দ পান ৬৯ হাজার ৫০০ টাকা। সবমিলিয়ে ৩১% লাখে কেটে নেওয়া হয় বলে কয়েকজন রেঞ্জ কর্মকর্তা জানান।
এদিকে, বিভাগীয় বন কর্মকর্তার জন্য বরাদ্দ করা সরকারি বাসভবনের পাশে গরুর খামার ও বন মোরগ দিয়ে পোল্ট্রি ফার্ম গড়ে তোলা হয়েছে। আর সেখানে কাজ করছে আউট সোর্সিংয়ের ৪ জন কর্মচারী। প্রতি মাসে ৬৬ হাজার টাকা সরকারি বেতন ( প্রতি জন ১৬৫০০ টাকা) নেওয়া কর্মচারীরা অফিসের চেয়ে ডিএফওর নিজের গড়ে তোলা খামার ও পোল্ট্রি ফার্মে ই সময় ব্যয় করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

গরুর খামার ও বন মোরগ দিয়ে পোল্ট্রি ফার্ম গড়ে তোলার বিষয়টি অবগত রয়েছেন বনবিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তারাও।

গরু ও মুরগী পরিচর্যায় নিয়োজিত রয়েছেন সরকারী বেতনভুক্ত আউট সোর্সিংয়ের ৪ জন কর্মচারী। তারা হলেন, জয়দেব, মো. ফোরকান, তন্ময় চাকমা ও কারি রাম তন্ময় চাকমা ও কারি রাম। সরকারি বেতন নেওয়া ওইসব কর্মচারী বিভাগীয় বন কর্মকর্তার অফিসের চেয়ে গরু ও মুরগী পরিচর্যার পেছনে সময় ব্যয় করেন।

সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে ভবনের ভেতরে যেতে চাইলে আউটসোর্সিং বনকর্মীরা বাঁধা দেন। পরে ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, মূল ভবনের সামনে একটি বড় গরুর গোয়ালাঘর তৈরি করা হয়েছে।

ভেতরে ছোট-বড় বেশ কয়েকটি গরু বাঁধা রয়েছে। গরু দেখাশোনায় থাকা ব্যক্তি এখানে বসবাস করেন। তবে বিষয়টি এড়িয়ে যান তন্ময় চাকমা ও কারি রাম। এছাড়া ভবনের বাইরে চারপাশে সবজি চাষ করার জন্য বাঁশের মাচা তৈরি করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিভাগীয় বন কর্মকর্তার বাস ভবনে সংরক্ষিত এলাকায় সরকারি এই বাস ভবনের ভেতরে রাখা গরুগুলোর তদারকিতে আছেন ডিএফও অফিসের আউট সোসিং স্টাফ তন্ময় চাকমা ও কারি রাম।

সরকারি বাসভবনে গরু ও বন মুরগি রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, বিগত ২/৩ মাস থেকে এখানে গরু রাখা হয়। দিনে কিংবা রাতে সমান তালে আলোক বাতি ব্যবহার করে বিদ্যুতের অপচয় করতে দেখা যায় বাস ভবনে গড়ে তোলা গরুর খামারে।

গত বছর অক্টোবর মাসের পর থেকে সরকারী খরচে বরাদ্দ করা বাস ভবনের পাশে খামার তৈরি করা হয়েছে জানান স্থানীয়রা।

গরু খামারে নিয়োজিত কর্মচারী তন্ময় চাকমা বলেন, এটা গরু রাখার ঘর কি না, আমি জানি না। আমাকে গরু দেখাশোনার জন্য রাখা হয়েছে। প্রতিদিন এখান থেকে গরু বের করে পরিচর্যা করা, ঘাস খাওয়াই এবং সন্ধ্যায় গোয়ালঘরে এনে গরু বেঁধে রাখি।
গরুর দুধও বিক্রি করা হয়। মুরগীও বিক্রি করা হয়।
খামারের মালিক কে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে কথা না বলে, অন্যত্র মোবাইলফোনে কথা বলতে চেষ্টা করেন। পরে জানান ডিএফও নুরুল ইসলাম এই খামারের মালিক।

অভিযোগের বিষয়ে ডিএফও নুরুল ইসলাম বলেন, সাবেক বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সরকারী খরচে খামার ও ফার্ম গড়ে তুলেন। এরপর এখন নতুন ভাবে গরু কিনে ব্যক্তিগত খামার করা হয়েছে। আরও বিভিন্ন
জানতে চাইলে পরে জানাবেন বলে ফোনকল কেটে দেন এবং এ বিষয়ে প্রতিবেদন না করতে তার ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তিকে দিয়ে ফোনকলে অনুরোধ করান।

….. (চলবে..)