
সিবিসি নিউজ ডেস্ক :
কক্সবাজারে জাফর আলম ও জামাল হোসেন নামে দুই মৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও একই ব্যক্তিকে একাধিক বার আসামী করা হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, গত বছর ৫ই আগষ্ট মাসে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ওই ব্যক্তির নাম মামলার আসামির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া গত ১৬ মার্চ চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি জামিল হোসাইন মারা যান। তাকেও ৩৯৪ নম্বর আসামী করা হয়। ১৭২ নম্বর আসামী ইমরুল হাসান রাশেদ। একই ভাবে ৪৬৩ নম্বর আসামীও ইমরুল হাসান রাশেদ। একজন ব্যক্তিকে ২ বার আসামী হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও ৪ জনকে দুইবার করে আসামী করা হয়।
আসামী জাফর আলম মাঝি মৃত্যু সনদ।
এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা।
গেল ৪ আগস্ট কক্সবাজার শহরের লালদিঘীর পাড় এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে হামলা ও আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নের অভিযোগে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের ৭৭০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। এতে ৫২০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। মামলায় ৫২০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে গত বছর ৫ আগষ্ট ক্যান্সার আক্রান্ত ব্যক্তি জাফর আলম মাঝিকে, পাশাপাশি ২৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
শনিবার (২২ মার্চ) এনামুল হক নামের এক ছাত্র প্রতিনিধি বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। বাদী এনামুল হকের স্থায়ী ঠিকানা চট্টগ্রামের বাঁশখালী হলেও তিনি বর্তমানে কক্সবাজার সদরের মুহুরী পাড়ায় বসবাস করছেন।
মৃত জাফর আলমের ছেলে সাইফুল ইসলাম বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, “আমার বাবা জাফর আলম ঈদগাঁওয়ের ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ক্যান্সারে ভুগছিলেন এবং ২০২৩ সালের ৬ জুন তার অপারেশন হয়। এরপর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বিকেলে তিনি মারা যান। অথচ তার নাম মামলার আসামির তালিকায় দেখে আমরা হতবাক।”
এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াস খান বলেন, “এমন কিছু হয়ে থাকলে তদন্ত করে মৃত ব্যক্তির নাম বাদ দেওয়া হবে।”
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়কের স্ট্যাটাস।
এদিকে, দায়েরকৃত মামলায় আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফাকে প্রধান আসামি করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, আশেক উল্লাহ রফিক, জাফর আলম, আবদুর রহমান বদি, মেয়র মাহবুবুর রহমান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহীনুল হক মার্শাল, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাশেদুল হক রাশেদ, জেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক শহীদুল হক সোহেল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক কায়ছারুল হক জুয়েল, যুব মহিলা লীগ সভাপতি তাহমিনা হক চৌধুরী লুনা, সাধারণ সম্পাদক রোমেনা আকতার সহ জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ এবং সহযোগী ও অঙ্গসংগঠনের ৫২০ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে এই মামলার বিষয়ে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারে”এসে মৃত ব্যক্তিসহ ৭৭০ জনের নামে মামলা দায়েরের ঘটনা জানেন না কক্সবাজারের সমন্বয়করা! ইতোমধ্যে অসংখ্য কক্সবাজারের সমন্বয়করা ফেকবুকে স্ট্যাটাসের মাধ্যমে বিষয়টি খোলাসা করেছেন।